সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের রাজিবপুর দাখিল মাদ্রাসা(ইআইআইএন নং-১২৮৪৫১) অর্ধযুগ ধরে এমপিও বঞ্চিত। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসাটির বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেরা বেতন না পেয়ে অনেক দু:খ-দুর্দশার মধ্যে দিনাতিপাত করলেও ধরে রেখেছেন পড়াশোনার মান। বিগত বছরের দাখিল, এবতেদায়ী ও জেডেসি পরীক্ষার ফলাফল খুবই ভালো। চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলসহ বর্তমান সরকারের আমলেও এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেও বঞ্চিত হয়েছে মাদ্রাসাটি।
বর্তমান মহাজোট সরকারের সময় দীর্ঘদিন পরে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু হলে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভূক্ত করতে স্থানীয় সাংসদ তানভীর শাকিল জয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর আধা-সরকারি পত্র(ডিও) দেন। এ বিষয়ে জোর সুপারিশও করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ারভাইস মার্শাল(অব.) একে খন্দকার এমপি।
স্থানীয় সাংসদ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর সুপারিশ এবং এমপিওভুক্তির নীতিমালা শতভাগ পুরণ করায় বর্তমান সরকারের দেওয়া শিক্ষামন্ত্রীর করা এমপিও’র প্রথম তালিকায় (৬মে’ ২০১০ ইং তারিখে শা-১৩/এমপিও/১২/২০০৯/১৮৪) মাদ্রাসাটি স্থানও পায়। খবরটি মাদ্রসার শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রীদেরসহ এলাকাবাসীর মধ্যে এনে দেয় আনন্দ-উচ্ছাস। নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষক-কর্মচারীরা জেলা শিক্ষা অফিসের প্রয়োজনীয় কার্যাদিসহ ব্যাংকে হিসাবও খোলেন।
কিন্তু কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রথম তালিকা বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা উপদেষ্টার করা দ্বিতীয় তালিকায় অজ্ঞাত কারণে মাদ্রাসাটিকে বাদ দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পরে এমপিও পেয়ে খুশির জোয়ারে ভাসতে থাকা শিক্ষক শিক্ষার্থীরা চলে যান হতাশার দুয়ারে।
মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আবু লাইছ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকারা একেবারে শুরু থেকে শিক্ষার্থীদেরকে নিবিড় ভাবে পড়াশোনা করাচ্ছেন। যার ফলশ্রতিতে সব পরীক্ষার ফলাফল জেলার মধ্যে প্রথম দিকেই। এবারের দাখিল পরীক্ষায় আমাদের ছেলেরা বরাবরের মতোই ভালো করবে। সরকার এমপিও দেওয়ার জন্য যে নীতিমালা তৈরি করেছে, তার সব কয়টি শর্তই পূরণ করে আমাদের মাদ্রাসা। সবারই প্রত্যাশা, এবার মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হবে।
বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি উল্লেখ করে এমপিওভূক্তির পাশাপাশি একাডেমিক ভবন দরকারও বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্থানীয় সরকারদলীয় সাংসদ তানভীর শাকিল জয় প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষামন্ত্রী বরাবর ডিও লেটার দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ম্রাদাসাটির সহ সুপার কাজী ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সবাই জড়িত। তাই বেতন না পেয়েও নানা অভাব অনটনের মধ্যেও সবাই নিয়মিত ক্লাস নেন। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বুঝতেও দেন না তাদের ভেতরে জমে থাকা বেদনা। এমপিওভুক্তি হলে শিক্ষকেরা আরও বেশি মনোযোগী হবেন। প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠবে জেলার মধ্যে অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান।
মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সমাজসেবক এম এ খালেক বলেন, এলাকায় মাদ্রাসা নেই সেই চিন্তা থেকেই প্রতিষ্ঠানটির জন্ম। এটি নিয়ে এলাকাবাসীর অনেক আগ্রহ। আধুনিক শিক্ষা পাবে এম ভাবনায় তারা তাদের ছেলে মেয়েদেরকে পাঠাচ্ছেন। প্রথম থেকেই পাকা ঘর, খেলার মাঠসহ এক মনোরম পরিবেশ পেয়ে শিক্ষার্থীরা মুগ্ধ। বর্তমান সরকার সব কিছু বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করবে বলে আমার বিশ্বাস।